এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শাহবাগ থানায় এই মামলা করা হয়।
এর আগে ৩১ আগস্ট রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ দফায় হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। রোববার সকাল থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ঢামেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় হামলাকারীদের আটক ও শাস্তি নিশ্চিত এবং সারাদেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ কয়েক দফা দাবি জানানো হয়।
এদিকে দাবি পূরণ না হওয়ায় চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে সব চিকিৎসাকেন্দ্রে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন তারা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ দুপুরে প্রশাসনিক ব্লকে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আপনারা জানেন গতকাল শনিবার থেকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আমাদের তিনজন চিকিৎসককে নিউরোসার্জারি বিভাগ থেকে মারতে মারতে প্রশাসনিক ব্লকের পরিচালকের রুমে নিয়ে আসা হয়। সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বহিরাগতরা এসে হাসপাতালে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এরপর ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) এসে ভাঙচুর চালায়। এরকম ঘটনা যদি প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায় আমরা রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা সেবা দেবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা নেই সেখানে আমরা কীভাবে চিকিৎসা দেবো।
তিনি আরও বলেন, অনতিবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব উপজেলা, জেলা সদরসহ সব হাসপাতালে আর্মি নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ করতে হবে।
এ বিষয়ে নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহনেওয়াজ বিশ্বাস বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ কর্মসূচি নয়। আমরা শুধু আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। রাজনৈতিক কোনো দলও এখানে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবে না।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করাটা আমাদের নেশা এবং পেশা। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেও আমরা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদের সেবা নিশ্চিত করে গিয়েছি। আপনাদের সেবা দিতে আমরা ভালোবাসি, তাই আমরা কর্মবিরতিতে যেতে চাই না, কিন্তু আমাদের বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। কারণ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু আমাদের জন্যে না, রোগীদের জন্য তথা দেশবাসীর জন্যেও জরুরি।
রোববার সকালে চিকিৎসকরা কজে যোগ দিলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তারা। সবশেষ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসাররা তাদের কক্ষ বন্ধ করে দেন বন্ধ করে দেয়া হয় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার। এরপর থেকেই ঢাকা মেডিকেলের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে রোগীদের। চিকিৎসক না পেয়ে হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে চলে যেতে গেছে দেখা গেছে অধিকাংশ রোগীকে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor